2 এপ্রিল : সম্প্রতি পেন্টাগনের প্রকাশিত কাগজ-পত্র থেকে দেখা গেছে যে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় নিহত অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের দেহাবশেষ সমাধিস্থ করা নিয়ে মার্কিন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রচণ্ড বিতর্ক হয়েছে। ৯/১১ ঘটনায়
নিহতদের দেহাবশেষ ভূমি ভরাটের কাজে ব্যবহার হয়েছে তাও জানা গেছে এ সব দলিল ও কাগজ-পত্র থেকে। একদল এ সব কথিত দেহাবশেষকে মূলত মেডিক্যাল বর্জ্য হিসেবে দাবি করে বলেছে, এ সব বর্জ্যকে দেহাবশেষ হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক হয়নি।
পেন্টাগনের সম্প্রতি প্রকাশিত কাগজ-পত্রে দেখা যায় যে, ওই হামলায় নিহতদের দেহাবশেষ নিয়ে পেন্টাগনে বিতর্ক হয়েছে এবং এ সব দেহাবশেষের সংখ্যা ছিল এক হাজার তিনশ'একুশ। মার্কিন বিমান বাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেহাবশেষকে মেডিক্যাল বর্জ্য হিসেবে গণ্য করার এবং তা পুড়িয়ে ফেলার কথা বলেছিলেন।
২০০২ সালের ৫ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এ বিষয়ে ইমেইল চালাচালি হয়েছে। এসব ইমেইলসহ প্রায় দু'হাজার পৃষ্ঠার কাগজ-পত্র গত শুক্রবার প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। এতে দেখা গেছে সে সময়ে কোনো কোনো কর্মকর্তা বলেছেন, ভবিষ্যতে তাদের এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিতে পারে। তাই নিজেদের ভূমিকা কি ছিল তা প্রমাণের জন্য যেনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ইমেইলগুলো সংরক্ষণ করেন।
এতে আরো দেখা গেছে, মার্কিন বিমান বাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্নেল বলেছেন,এ সব দেহাবশেষ এরই মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে, ফলে তা সাগরে ফেলে দেয়া উচিত। অবশ্য বেসামরিক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ সব দেহাবশেষ সাগরে ফেলে দিতে হলে এ জন্য যাজক ও সাক্ষী উপস্থিত রাখতে হবে।
৯/১১-এর ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে পেন্টাগন কর্মকর্তাদের সাক্ষাতের কয়েক ঘন্টা পর এ সব দলিল ও কাগজ-পত্র প্রকাশ করা হয়। তাদের প্রিয়জনদের দেহাবশেষ কিভাবে পোড়ানো হয়েছে এবং আগুনে পোড়ানোর পর কিভাবে তা ভূমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার জন্য পেন্টাগনের ওপর নিহতদের পরিবার চাপ সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়া, ৯/১১ এর ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের দেহাবশেষ শেষপর্যন্ত ভূমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে-এ খবর জানাজানি হওয়ার পর মার্কিন জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। অবশ্য ২০০৮ সালের জুন মাসের পর দেহাবশেষ দিয়ে ভূমি ভরাটের তৎপরতা বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর থেকে বিমান বাহিনী এ ধরনের দেহাবশেষ বড় বড় পাত্রে ভর্তি করে নৌবাহিনী বা কোস্ট গার্ডের জাহাজের সাহায্যে তা সাগরে নিয়ে ফেলে দেয়।
পেন্টাগনের নথিতে দেখা গেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা ডেভিড চো-এর লিখিত নির্দেশে দেহাবশেষগুলো পুড়িয়ে তা সাগরে ফেলে দেয়ার কাজ শুরু হয়। তৎকালীন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফিল্ডের পেন্টাগন বিষয়ক পারসোনেল চিফের দায়িত্ব পালন করছিলেন ডেভিডে চো। গত মাসে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন মার্কিন বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল নর্টন শুয়ারটস।
No comments:
Post a Comment